সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতারা মৃতপ্রায়

bangla kobita
কবিতারা মৃতপ্রায়
শিরোনাম কবিতারা মৃতপ্রায়
আজিম আকাশ

বড় হতাশায় মানবজমিন কেঁপে উঠে
সমকালীন কবিতার অদৃশ্য ভূমিকম্পে,
এক আকাশ কালো মেঘের আড়ালে
হারিয়ে যাচ্ছে আজ কবিতার পাঠক।
উৎফুল্ল হৃদয়ে, নূতন কাব্যের ঘ্রাণে-
পৃষ্ঠার ভাঁজে ভাঁজে, আজ আর কেউ
খুঁজে না কোন কাঙ্খিত কবিতা।

ডিজিটাল প্রযুক্তির অনলাইন ফ্রি সংস্করণ
তথা বহুমাত্রিক টাইমপাস বিনোদনের-
যাঁতাকলে, কেবলই পিষ্ট হতে চলেছে
প্রিন্ট মিডিয়ার সাবেক পাঠকবৃন্দ।
তবে কী এভাবেই পিষ্ট হতে হতে
নিঃশেষে বিভাজ্য হবে অবশেষে?
তিল তিল করে হৃদয়ভূমে সঞ্চিত
সাহিত্যের প্রতি নিগূঢ় ভালোবাসায়-
তবে কী আজ শুধু অবমাননাই প্রাপ্য?

মিথ্যে সৃজনশীলতার ক্যানভাসে
জেগে ওঠা অজস্র  প্রকাশনাগুলো,
আজ আর মননে সৃজন করে না-
নজরুল কিংবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ডিজিটাল ফরমূলার রমরমা ধ্যাঁচে
প্রকাশনাগুলো আজ ব্যতিব্যস্ত-
বইমেলা কেন্দ্রিক বাণিজ্যিক মোহে।

বছরজুড়ে আজ আর হয় না তেমন
তরুণ কবির নতুন নতুন কাব্যের-
কোন তেজোদীপ্ত মোড়ক উন্মোচন,
কেবলমাত্র একুশ এলেই প্রকাশনাগুলোর
হাকডাক দিয়ে কসরত চলে বই প্রকাশের,
হরহামেশাই সূক্ষাতিসূক্ষ যাচাই-বাছাইহীন
ভুরিভুরি বই প্রকাশ হয় মানহীন মলাটে।


বাংলা একাডেমী চৌহদ্দীর স্টলগুলোয়
বাঁধ ভাঙা উচ্ছাসের ন্যায় লাখো-
মানব-মানবীর ঢলে হয় জনসমুদ্র,
তবু সংখ্যালঘু কিছু ছাড়া বাকীরা
ঘরে ফিরে রিক্ত হস্তে বইহীন মননে।

পুরোনো পাঠকের বই কেনার
ধ্যান-ধারণাগুলো সহসাই আজ-
সংকোচিত, মাঝে মাঝে দ্বিধান্বিতও বটে।
হয়তো বা কেউ কেউ আজ বই কিনে
দেউলিয়ার কথাও ভেবে থাকেন অনায়াসে;
এতোটা পথ হেঁটে হেঁটে কবিতারা আজ
পাঠকের হৃদয়ে অনেকটাই মৃতপ্রায়-
বিবর্তিত সভ্যতার ডিজিটাল পরিহাসে।

(টঙ্গিবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ।
১৬/০৩/১৪)
 কমেন্ট করতে ভুলবেন না কিন্তু ! নিচে দেখুন কমেন্ট বক্স

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্যারিসের চিঠি

প্যারিসের চিঠি শিরোনাম  : প্যারিসের চিঠি   লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রিয় আকাশি, গতকাল ঠিক দুপুরে তোমার চিঠি পয়েছি। খামের উপর নাম ঠিকানা পড়েই চিনতে পেরেছি তোমার হাতের লেখা; ঠিকানা পেলে কিভাবে লেখনি; কতদিন পর ঢাকার চিঠি; তাও তোমার লেখা, ভাবতে পারো আমার অবস্থা?? গতকাল প্যারিসে ঝরেছিলো এ বছরের রেকর্ড ভাঙ্গা তুষারপাত। তামাক ফুরিয়ে গেছে আনতে পারিনি; এই প্রথম আমি অনেকটা সময় নিয়ে ভুলেছিলাম তামাকের গন্ধ। তোমার চিঠিতে পরিবর্তন আর বদলে যাওয়ার সংবাদ; তুমি কষ্ট পেয়ে লিখেছো - রাত্রির ঢাকা এখন নিয়নের স্নিগধতা ছেড়ে নিয়েছে উতকট সোডিয়ামের সজ্জা, আমাদের প্রিয় রমনা রেস্তোরা এখন কালের সাক্ষী, শীতের বইমেলা পরিণত হয়েছে মিনাবাজারে, টি এস সি'র চত্বরে যেন উপ্তপ্ত বৈরুত। বদলে যাওয়া কষ্টের অপর নাম স্বৃতি এখন তাই নিয়ে বুঝি মেতে আছো; এই পরবাসে আমার চোখের সামনেও বদলে যেতে দেখলাম কত সুদুর ইতিহাস- বালির বাধের মতন ভেসে গেল বার্লিন প্রাচীর ... ইংলিস চ্যানেলের তল দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে চলছে ট্রেন; ইউরোপের মানচিত্র এখন রুটি হয়ে গেছে, ক্ষিদে পেলেই ছিড়ে ছিড়ে খাও, স্বাধীনতা মানেই যেন উদর পুর্তি...

সৈয়দ শামসুল হক এর কবিতা "আমার পরিচয়"

সৈয়দ শামসুল হক এর কবিতা  "আমার পরিচয়" শিরোনাম     আমার পরিচয় আমি জন্মেছি বাংলায় আমি বাংলায় কথা বলি। আমি বাংলার আলপথ দিয়ে ,   হাজার বছর চলি। চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে। তেরশত নদী শুধায় আমাকে ,   কোথা থেকে তুমি এলে   ? আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে। আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে আমি তো এসেছি পালযুগ নামে চিত্রকলার থেকে। এসেছি বাঙালি পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার থেকে এসেছি বাঙালি জোড়বাংলার মন্দির বেদি থেকে। এসেছি বাঙালি বরেন্দ্রভূমে সোনা মসজিদ থেকে এসেছি বাঙালি আউল-বাউল মাটির দেউল থেকে। আমি তো এসেছি সার্বভৌম বারোভূঁইয়ার থেকে আমি তো এসেছি   ‘ কমলার দীঘি ’ ‘ মহুয়ার পালা ’   থেকে। আমি তো এসেছি তিতুমীর আর হাজী শরীয়ত থেকে আমি তো এসেছি গীতাঞ্জলি ও অগ্নিবীণার থেকে। এসেছি বাঙালি ক্ষুদিরাম আর সূর্যসেনের থেকে এসেছি বাঙালি জয়নুল আর অবন ঠাকুর থেকে। এসেছি বাঙালি রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ থেকে এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে। আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে ...

কবি বিকাশ দাসের এক গুচ্ছ কবিতা সিঁড়ী এবং অন্যান্ন