সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছাড়পত্র-সুকান্ত ভট্টাচার্য

শিরোনাম ; ছাড়পত্র          
kobial.tk
যে শিশু ভূমিষ্ঠ হল আজ রাত্রে
তার মুখে খবর পেলুম:
সে পেয়েছে ছাড়পত্র এক,
নতুন বিশ্বের দ্বারে তাই ব্যক্ত করে অধিকার
জন্মমাত্র সুতীব্র চীৎকারে।
খর্বদেহ নিঃসহায়, তবু তার মুষ্টিবদ্ধ হাত
উত্তোলিত, উদ্ভাসিত
কী এক দুর্বোধ্য প্রতিজ্ঞায়।
সে ভাষা বোঝে না কেউ,
কেউ হাসে, কেউ করে মৃদু তিরস্কার।
আমি কিন্তু মনে মনে বুঝেছি সে ভাষা
পেয়েছি নতুন চিঠি আসন্ন যুগের-
পরিচয়-পত্র পড়ি ভূমিষ্ঠ শিশুর
অস্পষ্ট কুয়াশাভরা চোখে।
এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য ক'রে যাব আমি-
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
অবশেষে সব কাজ সেরে,
আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে
করে যাব আশীর্বাদ,
তারপর হব ইতিহাস।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্যারিসের চিঠি

প্যারিসের চিঠি শিরোনাম  : প্যারিসের চিঠি   লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রিয় আকাশি, গতকাল ঠিক দুপুরে তোমার চিঠি পয়েছি। খামের উপর নাম ঠিকানা পড়েই চিনতে পেরেছি তোমার হাতের লেখা; ঠিকানা পেলে কিভাবে লেখনি; কতদিন পর ঢাকার চিঠি; তাও তোমার লেখা, ভাবতে পারো আমার অবস্থা?? গতকাল প্যারিসে ঝরেছিলো এ বছরের রেকর্ড ভাঙ্গা তুষারপাত। তামাক ফুরিয়ে গেছে আনতে পারিনি; এই প্রথম আমি অনেকটা সময় নিয়ে ভুলেছিলাম তামাকের গন্ধ। তোমার চিঠিতে পরিবর্তন আর বদলে যাওয়ার সংবাদ; তুমি কষ্ট পেয়ে লিখেছো - রাত্রির ঢাকা এখন নিয়নের স্নিগধতা ছেড়ে নিয়েছে উতকট সোডিয়ামের সজ্জা, আমাদের প্রিয় রমনা রেস্তোরা এখন কালের সাক্ষী, শীতের বইমেলা পরিণত হয়েছে মিনাবাজারে, টি এস সি'র চত্বরে যেন উপ্তপ্ত বৈরুত। বদলে যাওয়া কষ্টের অপর নাম স্বৃতি এখন তাই নিয়ে বুঝি মেতে আছো; এই পরবাসে আমার চোখের সামনেও বদলে যেতে দেখলাম কত সুদুর ইতিহাস- বালির বাধের মতন ভেসে গেল বার্লিন প্রাচীর ... ইংলিস চ্যানেলের তল দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে চলছে ট্রেন; ইউরোপের মানচিত্র এখন রুটি হয়ে গেছে, ক্ষিদে পেলেই ছিড়ে ছিড়ে খাও, স্বাধীনতা মানেই যেন উদর পুর্তি...

সৈয়দ শামসুল হক এর কবিতা "আমার পরিচয়"

সৈয়দ শামসুল হক এর কবিতা  "আমার পরিচয়" শিরোনাম     আমার পরিচয় আমি জন্মেছি বাংলায় আমি বাংলায় কথা বলি। আমি বাংলার আলপথ দিয়ে ,   হাজার বছর চলি। চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে। তেরশত নদী শুধায় আমাকে ,   কোথা থেকে তুমি এলে   ? আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে। আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে আমি তো এসেছি পালযুগ নামে চিত্রকলার থেকে। এসেছি বাঙালি পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার থেকে এসেছি বাঙালি জোড়বাংলার মন্দির বেদি থেকে। এসেছি বাঙালি বরেন্দ্রভূমে সোনা মসজিদ থেকে এসেছি বাঙালি আউল-বাউল মাটির দেউল থেকে। আমি তো এসেছি সার্বভৌম বারোভূঁইয়ার থেকে আমি তো এসেছি   ‘ কমলার দীঘি ’ ‘ মহুয়ার পালা ’   থেকে। আমি তো এসেছি তিতুমীর আর হাজী শরীয়ত থেকে আমি তো এসেছি গীতাঞ্জলি ও অগ্নিবীণার থেকে। এসেছি বাঙালি ক্ষুদিরাম আর সূর্যসেনের থেকে এসেছি বাঙালি জয়নুল আর অবন ঠাকুর থেকে। এসেছি বাঙালি রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ থেকে এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে। আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে ...

কবি বিকাশ দাসের এক গুচ্ছ কবিতা সিঁড়ী এবং অন্যান্ন